উৎসর্গ
ছেলের বাড়ি থেকে দেখতে এসেছে মেয়েটিকে। পছন্দও করেছে। ছেলে বড় শহরের বড় ডাক্তার।কিন্তু খবর এলো ছন্নছাড়া এক যুবক মেয়েটির বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে উকিঝুঁকি মারে, আর দীর্ঘশ্বাস ফেলে। জানে না, বাড়ির ভিতরে অন্ধকারের আড়াল থেকে দেখছে ওকে মেয়েটি।
এক সময় মন খারাপ করে ফিরে যায় ছেলেটি। মেয়েটি মনের অজান্তে অচেনা যুবকের জন্য বালিশ ভেজায়।সে বলতে পারবে না, কেন ।
সম্ভবত কানপড়া দেয়াতে ভেঙে গেল বিয়েটা । মেয়েটি খুশি, আবার কিছুটা ভীতও বটে। বিয়ে-ভাঙা মেয়ে বলবে কী লোকে!
প্রচণ্ড বিরক্ত মেয়েটির বাবা। রাগে, অপমানে ফুটছেন
কে-এক ভবঘুরে ছোকরা ঘুরঘুর করছে ওঁর বাড়ির আশপাশে, কানে গেল ভদ্রলোকের । একদিন ডাকলেন তিনি ছেলেটিকে। শুনলেন বৃত্তান্ত ।
ভদ্রলোকের মনে কী ছিল, কে জানে, ডেকে পাঠালেন কন্যাকেও।
আচমকা দু'জনের হাত করে দিয়ে বললেন: 'যা, সুখী হ তোরা।' বিয়ে হয়ে গেল অনেকটা পত্রপাঠ ।
আচমকা রাজকন্যা পেয়ে গিয়ে একটার পর একটা ঢোক গিলছে
ছেলেটি । এই রত্ন সে রাখবে কোথায়? রোমান্টিসিজম যায় যায় অবস্থা । শেষ পর্যন্ত শান্তিনগরের এক টিনশেড বাসায় ঠাঁই হলো টোনা টুনির…
আজ ওদের বিয়ের ২৫ বছর পূর্ণ হল
সেই দিনের সেই মেয়েটি আমার মা।
এবং ভবঘুরে ছেলেটি আমার বাবা ।
ভাগ্যিস, হয়েছিল এঁদের বিয়েটা। না হলে কি লিখতে পারতাম এই উৎসর্গপত্র?
No comments